বসনিয়া কাজের ভিসা ও বেতন সম্পর্কে বিস্তারিত

বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, সংক্ষেপে বসনিয়া, তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত। এই দেশটিতে কাজের সুযোগ খুঁজছেন এমন বিদেশি নাগরিকদের জন্য বসনিয়ার কাজের ভিসা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই নিবন্ধে, আমরা বসনিয়ার কাজের ভিসা সম্পর্কিত বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করব।

বসনিয়ার কাজের ভিসার প্রকারভেদ

বসনিয়াতে কাজের ভিসার প্রকারভেদ মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে:

  1. অস্থায়ী কাজের ভিসা (Temporary Work Visa):
  • এই ভিসা সাধারণত এক বছরের জন্য দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে তা নবায়ন করা যায়।
  • এই ভিসা পেতে হলে আপনার কাছে বসনিয়ার কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে একটি চাকরির প্রস্তাব থাকতে হবে।
  • এই ভিসা মূলত স্বল্পমেয়াদী বা অস্থায়ী চাকরির জন্য প্রযোজ্য।
  1. স্থায়ী কাজের ভিসা (Permanent Work Visa):
  • এই ভিসা সাধারণত পাঁচ বছরের জন্য দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে স্থায়ী বসবাসের (Permanent Residency) আবেদন করার সুযোগ পাওয়া যায়।
  • এই ভিসা পেতে হলে আপনার কাছে বসনিয়ার কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে একটি দীর্ঘমেয়াদী চাকরির প্রস্তাব থাকতে হবে।
  • এই ভিসা মূলত দীর্ঘমেয়াদী বা স্থায়ী চাকরির জন্য প্রযোজ্য।

অন্যান্য ধরনের কাজের ভিসা:

উপরোক্ত দুটি প্রধান প্রকার ছাড়াও, বসনিয়াতে আরও কিছু ধরনের কাজের ভিসা রয়েছে, যেমন:

  • Intra-Company Transfer Visa: এই ভিসা বহুজাতিক কোম্পানির কর্মীদের জন্য যারা বসনিয়ার শাখায় স্থানান্তরিত হচ্ছেন।
  • Seasonal Work Visa: এই ভিসা মৌসুমি কাজের জন্য, যেমন কৃষি বা পর্যটন খাতে।
  • Self-Employment Visa: এই ভিসা স্ব-কর্মসংস্থানের জন্য, যেমন ফ্রিল্যান্সার বা ব্যবসায়ীদের জন্য।

বসনিয়ার কাজের ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া

বসনিয়াতে কাজের ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল হতে পারে, তবে সঠিক নির্দেশনা অনুসরণ করলে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিকভাবে জমা দিলে, আপনার আবেদন প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যাবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক বসনিয়ার কাজের ভিসা আবেদনের ধাপগুলি কী কী।

ধাপ ১: চাকরির প্রস্তাব

  • বসনিয়ার কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে একটি চাকরির প্রস্তাব পাওয়া।
  • এই চাকরির প্রস্তাবে অবশ্যই আপনার চুক্তির শর্তাবলী, বেতন, এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

ধাপ ২: ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন

  • একবার আপনি চাকরির প্রস্তাব পেয়ে গেলে, আপনার নিয়োগকর্তা আপনার পক্ষ থেকে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার কর্মসংস্থান সেবাতে একটি ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করবেন।
  • এই আবেদনের সাথে আপনার নিয়োগকর্তাকে আপনার চাকরির প্রস্তাবপত্র, আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
  • ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই সেই চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

ধাপ ৩: কাজের ভিসার আবেদন

  • ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদিত হওয়ার পর, আপনি আপনার নিকটস্থ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার দূতাবাস বা কনস্যুলেটে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
  • ভিসা আবেদনের সাথে আপনাকে নিম্নলিখিত কাগজপত্র জমা দিতে হবে:
    • একটি পূরণ করা ভিসা আবেদনপত্র
    • আপনার বৈধ পাসপোর্ট (যার মেয়াদ কমপক্ষে আপনার ভিসার মেয়াদ + ৩ মাস)
    • আপনার নিয়োগকর্তার দেওয়া ওয়ার্ক পারমিটের অনুলিপি
    • আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের অনুলিপি
    • একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (যা দেখায় যে আপনার কোনো ফৌজদারি রেকর্ড নেই)
    • একটি সাম্প্রতিক মেডিকেল সার্টিফিকেট (যা দেখায় যে আপনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী)
    • আপনার বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় থাকার জায়গার প্রমাণ
    • পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তার প্রমাণ
    • ভিসা আবেদন ফি

ধাপ ৪: ভিসা সাক্ষাৎকার

  • কিছু ক্ষেত্রে, দূতাবাস বা কনস্যুলেট আপনাকে একটি ভিসা সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকতে পারে।
  • এই সাক্ষাৎকারে, তারা আপনার বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় যাওয়ার উদ্দেশ্য, আপনার চাকরির বিবরণ, এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইতে পারে।

ধাপ ৫: ভিসা প্রক্রিয়াকরণ এবং সিদ্ধান্ত

  • আপনার আবেদন এবং সাক্ষাৎকার (যদি প্রযোজ্য হয়) পর্যালোচনা করার পর, দূতাবাস বা কনস্যুলেট আপনার ভিসা আবেদন অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান করবে।
  • এই প্রক্রিয়াকরণের সময় কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ টিপস:

  • আগে থেকে পরিকল্পনা করুন: ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হতে পারে, তাই আগে থেকে পরিকল্পনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
  • সঠিক এবং সম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করুন: আপনার আবেদনপত্রে সঠিক এবং সম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করুন। ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য আপনার আবেদন প্রত্যাখ্যানের কারণ হতে পারে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন: আবেদন করার আগে আপনার সকল কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন।
  • ধৈর্য ধরুন: ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময় কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তাই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন।

বসনিয়ার কাজের ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

বসনিয়ার কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার সময়, আপনাকে নিম্নলিখিত কাগজপত্র জমা দিতে হবে:

ব্যক্তিগত কাগজপত্র:

  • পূরণ করা ভিসা আবেদনপত্র: আপনাকে অবশ্যই বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার দূতাবাস বা কনস্যুলেট থেকে প্রাপ্ত সঠিক ভিসা আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে এবং স্বাক্ষর করতে হবে।
  • বৈধ পাসপোর্ট: আপনার পাসপোর্টটি অবশ্যই বৈধ হতে হবে এবং আপনার ভিসার মেয়াদ + কমপক্ষে ৩ মাস পর্যন্ত মেয়াদ থাকতে হবে।
  • পাসপোর্ট আকারের ছবি: সাম্প্রতিক সময়ের তোলা কমপক্ষে দুই কপি রঙিন পাসপোর্ট আকারের ছবি।

চাকরি সংক্রান্ত কাগজপত্র:

  • ওয়ার্ক পারমিট: আপনার নিয়োগকর্তার দেওয়া বসনিয়ার ওয়ার্ক পারমিটের অনুলিপি।
  • চাকরির প্রস্তাবপত্র: আপনার নিয়োগকর্তার কাছ থেকে প্রাপ্ত চাকরির প্রস্তাবপত্র, যেখানে আপনার চুক্তির শর্তাবলী, বেতন, এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং দক্ষতা:

  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র: আপনার সর্বোচ্চ অর্জিত ডিগ্রি বা ডিপ্লোমার সনদপত্রের অনুলিপি।
  • অভিজ্ঞতার সনদ: আপনার পূর্ববর্তী কর্ম অভিজ্ঞতার সনদ বা সার্টিফিকেট (যদি প্রযোজ্য হয়)।
  • দক্ষতার সনদ: আপনার চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় কোনো বিশেষ দক্ষতা বা প্রশিক্ষণের সনদ (যদি প্রযোজ্য হয়)।

অন্যান্য কাগজপত্র:

  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট: আপনার নিজ দেশ থেকে প্রাপ্ত একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট যা দেখায় যে আপনার কোনো ফৌজদারি রেকর্ড নেই।
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট: একটি সাম্প্রতিক মেডিকেল সার্টিফিকেট যা দেখায় যে আপনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং কোনো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত নন।
  • থাকার জায়গার প্রমাণ: বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় আপনার থাকার জায়গার প্রমাণ, যেমন একটি হোটেল বুকিং নিশ্চিতকরণ বা আপনার নিয়োগকর্তার দেওয়া থাকার ব্যবস্থার চিঠি।
  • আর্থিক সহায়তার প্রমাণ: আপনি বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় আপনার থাকার সময় নিজেকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারবেন এমন প্রমাণ, যেমন ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা আপনার নিয়োগকর্তার কাছ থেকে প্রাপ্ত আর্থিক সহায়তার চিঠি।
  • ভিসা আবেদন ফি: আপনাকে অবশ্যই প্রযোজ্য ভিসা আবেদন ফি দিতে হবে। এই ফি সাধারণত আপনার আবেদন জমা দেওয়ার সময় দিতে হয়।

গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টব্য:

  • এই তালিকাটি একটি সাধারণ নির্দেশিকা। আপনার নির্দিষ্ট পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে অতিরিক্ত কাগজপত্রের প্রয়োজন হতে পারে।
  • সর্বশেষ তথ্য এবং প্রয়োজনীয়তাগুলির জন্য সর্বদা বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার দূতাবাস বা কনস্যুলেটের ওয়েবসাইট দেখুন বা তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
  • সকল কাগজপত্র ইংরেজি বা বসনিয়ান, ক্রোয়েশিয়ান, বা সার্বিয়ান ভাষায় অনুবাদ করতে হবে।

আরো জানুন: ডেনমার্ক কাজের ভিসা ও বেতন সম্পর্কে

বসনিয়া কাজের বেতন কত

বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় বেতনের পরিমাণ কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অবস্থানের উপর নির্ভর করে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে, কিছু সাধারণ তথ্য এখানে দেওয়া হলো:

  • গড় বেতন: বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় গড় মাসিক বেতন প্রায় 940 BAM (বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা কনভার্টেবল মার্ক), যা প্রায় 480 ইউরো বা 570 মার্কিন ডলার এর সমান।
  • সর্বনিম্ন বেতন: বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ফেডারেশনে সর্বনিম্ন মাসিক বেতন প্রায় 596 BAM (প্রায় 305 ইউরো) এবং সার্ব প্রজাতন্ত্রে (Republika Srpska) এটি 700 BAM (প্রায় 358 ইউরো)।
  • উচ্চ বেতনভোগী পেশা: তথ্য প্রযুক্তি, প্রকৌশল, এবং ব্যবসায় প্রশাসন এর মতো ক্ষেত্রগুলোতে সাধারণত বেশি বেতন পাওয়া যায়।
  • নিম্ন বেতনভোগী পেশা: কৃষি, খুচরা বিক্রয়, এবং পরিষেবা খাতের মতো ক্ষেত্রগুলোতে সাধারণত কম বেতন পাওয়া যায়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

  • জীবনযাত্রার ব্যয়: বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় জীবনযাত্রার ব্যয় অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় অনেক কম। তাই, আপনার বেতন অন্য দেশের তুলনায় কম হলেও, আপনি সেখানে আরামদায়ক জীবনযাপন করতে পারবেন।
  • কর: বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় আয়করের হার তুলনামূলকভাবে কম।
  • অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতা: আপনার অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতা যত বেশি হবে, আপনার বেতন তত বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • অবস্থান: বড় শহরগুলোতে, বিশেষ করে সারাজেভোতে, সাধারণত ছোট শহর বা গ্রামের তুলনায় বেতন বেশি হয়।

আপনার প্রত্যাশিত বেতন নির্ধারণ:

  • আপনি যে ধরনের কাজ খুঁজছেন এবং আপনার অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা কী, তা বিবেচনা করে আপনার প্রত্যাশিত বেতন নির্ধারণ করুন।
  • অনলাইন জব পোর্টাল বা বেতন সমীক্ষা ওয়েবসাইটগুলি দেখে আপনার পছন্দের কাজের জন্য বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় সাধারণত কত বেতন দেওয়া হয় তা সম্পর্কে একটি ধারণা নিন।
  • আপনার নিয়োগকর্তার সাথে বেতন নিয়ে আলোচনা করতে দ্বিধা করবেন না।

বসনিয়াতে কাজ করার সুবিধা

বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, সংক্ষেপে বসনিয়া, একটি উন্নয়নশীল দেশ হলেও এখানে কাজ করার বেশ কিছু আকর্ষণীয় সুবিধা রয়েছে যা বিদেশি কর্মীদের জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে। চলুন দেখে নেওয়া যাক বসনিয়াতে কাজ করার কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা:

১. কম জীবনযাত্রার ব্যয়:

  • বসনিয়াতে জীবনযাত্রার ব্যয় অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় অনেক কম।
  • আপনি সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন, খাদ্য, পরিবহন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেতে পারেন।
  • এর ফলে আপনার সঞ্চয় করার বা আপনার আয় দিয়ে আরও বেশি কিছু করার সুযোগ থাকে।

২. প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতি:

  • বসনিয়া তার অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে সুউচ্চ পর্বতমালা, স্বচ্ছ নদী, এবং মনোরম গ্রামীণ পরিবেশ।
  • এছাড়াও, বসনিয়ার সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।

৩. বহু-সাংস্কৃতিক পরিবেশ:

  • বসনিয়া একটি বহু-সাংস্কৃতিক দেশ, যেখানে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, এবং সংস্কৃতির মানুষ একসাথে বসবাস করে।
  • এই বৈচিত্র্যময় পরিবেশ আপনাকে বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার এবং আপনার দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করার সুযোগ দেয়।

৪. কর্মজীবন উন্নয়নের সুযোগ:

  • বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করছে।
  • বিশেষ করে পর্যটন, তথ্য প্রযুক্তি, এবং নির্মাণ খাতে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের চাহিদা রয়েছে।

৫. সহজ ভাষাগত অভিযোজন:

  • যদিও বসনিয়ান, ক্রোয়েশিয়ান, এবং সার্বিয়ান ভাষা বসনিয়ার সরকারি ভাষা, তবে অনেক মানুষ ইংরেজিও বোঝে এবং কথা বলতে পারে।
  • এটি বিদেশি কর্মীদের জন্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি সুবিধা।

৬. উষ্ণ এবং বন্ধুসুলভ মানুষ:

  • বসনিয়ার মানুষ তাদের উষ্ণ আতিথেয়তা এবং বন্ধুসুলভ মনোভাবের জন্য পরিচিত।
  • তারা বিদেশিদের সাদরে গ্রহণ করে এবং তাদের দেশে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে সাহায্য করে।

৭. কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য:

  • বসনিয়াতে কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখার উপর জোর দেওয়া হয়।
  • এর ফলে আপনি আপনার কাজ উপভোগ করার পাশাপাশি আপনার পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে পারেন।

৮. ইউরোপের প্রবেশদ্বার:

  • বসনিয়া ইউরোপের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, যা আপনাকে ইউরোপের অন্যান্য দেশ ভ্রমণ করার সুযোগ করে দেয়।

আরো পড়ুন: পর্তুগাল কাজের ভিসা ও বেতন সম্পর্কে

কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

  • আবেদন করার আগে বসনিয়ার কাজের ভিসা সম্পর্কিত সকল নিয়ম ও শর্ত ভালোভাবে জেনে নিন।
  • আপনার আবেদনপত্রে সঠিক এবং সম্পূর্ণ তথ্য দিন।
  • আবেদন করার আগে আপনার সকল কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন।
  • আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে বসনিয়ার দূতাবাস বা কনস্যুলেটের সাথে যোগাযোগ করুন।
  • বসনিয়ার ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান অর্জন করলে আপনার অভিযোজন প্রক্রিয়া সহজ হবে।
উপসংহার

বসনিয়াতে কাজের ভিসা পাওয়া কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তবে সঠিক পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির মাধ্যমে এটি অর্জন করা সম্ভব। এই নিবন্ধে প্রদত্ত তথ্য আপনাকে বসনিয়ার কাজের ভিসা সম্পর্কে একটি সামগ্রিক ধারণা প্রদান করেছে। আশা করি, এই তথ্য আপনার স্বপ্নপূরণের পথে সহায়ক হবে।

বসনিয়া কাজের ভিসা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর

 

বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় কাজের ভিসার জন্য কারা আবেদন করতে পারেন?

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU)/ইউরোপীয় অর্থনৈতিক এলাকা (EEA) এবং সুইজারল্যান্ডের নাগরিকরা ৯০ দিন পর্যন্ত ভিসা ছাড়াই থাকতে এবং কাজ করতে পারবেন, অন্য দেশের নাগরিকদের অবশ্যই বৈধ কাজের ভিসা বা অনুমতি প্রয়োজন।

বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে কত খরচ হয়?

আবেদনের খরচ আপনার ভিসার ধরন এবং জাতীয়তার উপর নির্ভর করে ৪০ থেকে ১০০ ইউরোর মধ্যে হতে পারে।

বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় কাজের ভিসা পেতে কত সময় লাগে?

আবেদন প্রক্রিয়াকরণের সময় ভিসার ধরন এবং আবেদনের জটিলতার উপর নির্ভর করে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় নিতে পারে।

বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় কাজের ভিসা পাওয়া কতটা কঠিন?

বৈধ চাকরির প্রস্তাব এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকলে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার কাজের ভিসা পাওয়া অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় তুলনামূলকভাবে সহজ হতে পারে।

আমি কি আমার পরিবারকে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় নিয়ে যেতে পারি?

সাধারণত, আপনি আপনার পরিবারের সদস্যদের (স্বামী/স্ত্রী এবং সন্তান) সাথে নিয়ে যেতে পারেন, তবে অতিরিক্ত কাগজপত্র জমা এবং কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।

বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় কাজের ভিসা নিয়ে আমি কি অন্য কোনো ইউরোপীয় দেশে কাজ করতে পারি?

না, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার কাজের ভিসা শুধুমাত্র সেই দেশেই বৈধ।

Leave a Comment